২০২৫-২৬ বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। নির্বাচিত সরকার না থাকায় তিনি দেশের টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভির মাধ্যমে বাজেট পরিচিত করাবেন। চলমান কঠিন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি প্রস্তাব করা হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সময় নতুন শুল্ক আরোপ করলে পণ্যের দাম পুনরায় বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা মানুষের দৈনন্দিন খরচ বাড়াবে।

প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয় বাড়ানোর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়ে থাকে, যার ফলে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ে।

টেবিলওয়্যার:
প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার এবং অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রীর ওপর ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব আছে, যার কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

মোবাইল ফোন:
দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনের ক্ষেত্রে হ্রাস পাওয়া ভ্যাট বাড়ানো হবে। বিভিন্ন উৎপাদন পর্যায়ে ২ থেকে ২.৫ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট বাড়ানো হতে পারে, ফলে দেশীয় মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে।

কসমেটিকস:
লিপস্টিক, লিপলাইনার, আইলাইনার, ফেসওয়াশ ও অন্যান্য সৌন্দর্য সামগ্রীর আমদানিতে শুল্কের ন্যূনতম মূল্য দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে, ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

বাস-ট্রাক:
বাস ও ট্রাকের বডি প্রস্তুতিতে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার পরিকল্পনা আছে, ফলে এই যানবাহনের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার:
ভ্যাট অব্যাহতির সংস্কৃতি বন্ধ করে রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হতে পারে, যা দেশের ফ্রিজ ও এসির দাম বাড়িয়ে বিদেশি ইলেকট্রনিক্স আমদানি বাড়াতে পারে।

সুতা:
দেশীয় টেক্সটাইলের জন্য উৎপাদিত সুতার ভ্যাট বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি কেজি কটন ও ম্যান মেইড ফাইবার সুতার কর ৩ থেকে ৫ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে, যা গামছা, লুঙ্গিসহ পোশাকের দাম বাড়াতে পারে।

রড:
নির্মাণের প্রধান কাঁচামাল রড ও এঙ্গেল বারের কর বাড়ানো হবে। স্ক্র্যাপ ও রাসায়নিক উপকরণের শুল্ক-কর বাড়ানো হওয়ায় নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে।

হেলিকপ্টার:
নতুন অর্থবছরে হেলিকপ্টার আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব রয়েছে, যা আমদানির ব্যয় বৃদ্ধি করবে।

ব্লেড:
সেলুনে ব্যবহৃত শেভিং ব্লেডের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে, যা ব্লেডের দাম বাড়াবে।

বিদেশি চকোলেট:
চকোলেট আমদানিতে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য চার ডলার থেকে ১০ ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব রয়েছে, যার ফলে দাম বৃদ্ধি পেতে পারে।

খেলনা:
দেশীয় শিল্প রক্ষায় বিদেশি খেলনার শুল্ক বৃদ্ধি করা হবে, যা খেলনার দাম বাড়াবে।

মার্বেল-গ্রানাইট:
মার্বেল ও গ্রানাইট পাথরের শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে, ফলে এর দাম বাড়তে পারে।

মোটর:
বাটারিচালিত রিকশার ৭৫০ ওয়াট ডিসি মোটরের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।

অন্যান্য পণ্য:
মাখন, তারকাঁটা, স্ক্রু, নাট-বোল্ট, ইলেকট্রিক হার্ডওয়্যার, পোল ফিটিংস, সেল্ফ কপি পেপার, প্লাস্টিকের এককালীন গ্লাস ও প্লেট, তামাক বীজ, মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের খাদ্যসাপ্লিমেন্ট, বেভারেজ সামগ্রী, দরজার তালা ইত্যাদির শুল্ক ও কর বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে, যা এসব পণ্যের দাম বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি করবে।