https://www.varendratimes.com/

1259

lifestyle

গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ

প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩২ | আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:২৬

গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা সাধারণত স্বাভাবিক হলেও, কিছু ক্ষেত্রে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে এবং এগুলো বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা অনুভূত হলে বিষয়টি বোঝা এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ কারণসমূহ

গর্ভাবস্থায় পেটের ব্যথা অনেক সময় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে হয়, যা এই সময়ে স্বাভাবিক। কিছু সাধারণ কারণ নিচে আলোচনা করা হলো:

(ক) গ্যাস ও বদহজম গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন: প্রোজেস্টেরন এবং রিলাক্সিন হরমোন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের কার্যক্ষমতা ধীর করে দিতে পারে, ফলে গ্যাস ও বদহজম হয়। ফলস্বরূপ পেটের বাম পাশে ব্যথা: গ্যাসের জন্য পেটের বাম পাশে চাপ এবং ব্যথা হতে পারে। (খ) লিগামেন্টের টান রাউন্ড লিগামেন্ট পেইন: গর্ভাবস্থায় জরায়ুর বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে রাউন্ড লিগামেন্টে টান পড়ে এবং এটি পেটের বাম পাশে ব্যথার কারণ হতে পারে। সাধারণত ২য় ত্রৈমাসিকে ঘটে: এই ধরনের ব্যথা হঠাৎ অনুভূত হতে পারে এবং এটি কিছুক্ষণের জন্য স্থায়ী হয়। (গ) পেশির টান ও ক্লান্তি গর্ভাবস্থায় পেটের পেশি প্রসারিত হওয়ার কারণে পেশিতে টান পড়তে পারে, যা ব্যথার কারণ হতে পারে। অনেক মা-বাবা এই সময় অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, যা ব্যথা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

গুরুতর কারণসমূহ

যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেটের বাম পাশে ব্যথা স্বাভাবিক, কিছু ক্ষেত্রে এটি গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু গুরুতর কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:

ইকটপিক গর্ভাবস্থা কারণ ও লক্ষণ: যখন গর্ভধারণ জরায়ুর বাইরে হয়, তখন এটি ইকটপিক গর্ভাবস্থা বলে। এই অবস্থায় পেটের এক পাশে তীব্র ব্যথা হয়। এটা জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন: ইকটপিক গর্ভাবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটি জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা করা উচিত। প্লাসেন্টাল এব্রাপশন কারণ ও লক্ষণ: প্লাসেন্টা জরায়ুর থেকে আলাদা হয়ে গেলে, এটি প্লাসেন্টাল এব্রাপশন বলা হয়। এই অবস্থায় পেটের তীব্র ব্যথা এবং রক্তপাত হতে পারে। জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন: এটি গর্ভাবস্থায় একটি মারাত্মক জটিলতা এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI) কারণ ও লক্ষণ: গর্ভাবস্থায় মূত্রথলির সংক্রমণ অনেক সময় পেটে ব্যথার কারণ হতে পারে। চিকিৎসা প্রয়োজন: ইউরিনারি ইনফেকশন চিকিৎসা না করলে এটি কিডনি ইনফেকশনের দিকে রূপ নিতে পারে, তাই সময়মতো চিকিৎসা নিতে হবে। অকাল গর্ভপাত কারণ ও লক্ষণ: যদি গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে পেটে ব্যথা এবং রক্তপাত হয়, এটি গর্ভপাতের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ নজর: এই লক্ষণগুলো দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

ব্যথা প্রতিরোধের উপায়সমূহ

পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ: খাদ্যে বেশি ফাইবার গ্রহণ করলে গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমের সমস্যা কম হয়। সঠিক বিশ্রাম: পেটের ব্যথা কমাতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। বিশেষ করে বাঁ পাশে শোয়া গর্ভাবস্থায় শরীরের জন্য উপকারী। অন্য চিকিৎসা: ব্যথা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ নিতে হবে, যা নিরাপদ।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার সময়

গর্ভাবস্থায় যদি পেটের বাম পাশে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও, যদি নিচের যে কোনও লক্ষণ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন:

তীব্র ব্যথা এবং চাপ অনুভব প্রচুর রক্তপাত বা হালকা রক্তপাতসহ ব্যথা উচ্চমাত্রার জ্বর বা তীব্র বমি

উপসংহার

গর্ভাবস্থায় পেটের বাম পাশে ব্যথা খুব সাধারণ হলেও এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যারও ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ।