https://www.varendratimes.com/

5116

rajshahi

রাজশাহী বিভাগে এবার থেকে কেজি দরে আম কেনাবেচা বাধ্যতামূলক

প্রকাশিত : ০৫ জুন ২০২৫ ২৩:৩৬

রাজশাহী বিভাগে এখন থেকে আম মণ দরে নয়, বরং কেজি দরে বেচাকেনা করতে হবে। আগামী শুক্রবার (৬ জুন) থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিভাগের চারটি জেলার—নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ব্যবসায়ী, চাষি ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী অঞ্চলে এক মণ আম কিনতে গিয়ে আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজি পর্যন্ত আম সংগ্রহ করে থাকলেও, দাম দেন মাত্র ৪০ কেজি বা এক মণের হিসাবে। এই ‘ঢলন’ পদ্ধতির কারণে কৃষকেরা বারবার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। পূর্বেও এই অনিয়ম বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। এবার কেজি দরে বেচাকেনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে প্রশাসন।

বিভিন্ন মহল থেকে আসা আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসে। সেখানে কেজি দরে আম বিক্রির প্রস্তাবনা গৃহীত হয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয়কে সারাদেশে একীভূতভাবে এ নিয়ম চালুর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। যদিও মন্ত্রণালয় এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি।

বর্তমানে রাজশাহীর আম বাজারে ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন হাটে এখনও মণ দরে আম বিক্রি হচ্ছে। এই অবস্থায়統একক মানের নির্ধারণ ও প্রয়োগে উদ্যোগ নেয়া হয়। বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, কানসাটসহ বিভিন্ন এলাকার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে একমত হন, যাতে বিভাগের প্রতিটি জেলায় একই নিয়মে আম কেনাবেচা হয়।

বৃহস্পতিবার আয়োজিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। বৈঠকে জানানো হয়, রাজশাহীর আম সারাদেশেই চাহিদাসম্পন্ন এবং মানের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু ওজনের অসঙ্গতির কারণে চাষিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। আম পচনশীল হওয়ায় কৃষক বাধ্য হয়ে ঢলনসহ মণ দরে আম বিক্রি করেন, যা তাদের আর্থিক ক্ষতির অন্যতম কারণ।

বৈঠকে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা উন্মুক্ত আলোচনা করেন। কেউ কেউ জানান, চাষিরা নানা আকারের আম এক ক্যারেটে মিশিয়ে থাকেন। ব্যবসায়ীরা কমিশন নির্ধারণের প্রস্তাবও দেন। আলোচনা শেষে সবাই সর্বসম্মতভাবে কেজি দরে আম কেনাবেচার পক্ষে মত দেন।

অবশেষে সিদ্ধান্ত হয়, আমের জাত, গ্রেড ও মান বিবেচনায় কেজি ভিত্তিক দাম নির্ধারিত হবে এবং পাইকারি ও খুচরা—সব ধাপে এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। আড়তদাররা কোন ধাপে কমিশন নিতে পারবেন না। একইসঙ্গে সারাদেশে এ নিয়ম বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয়কে পুনরায় জানানো হবে।

এই সিদ্ধান্ত শুক্রবার থেকে রাজশাহী বিভাগের সর্বত্র কার্যকর করা হবে এবং তা ব্যাপকভাবে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সবাই যেন এই সিদ্ধান্ত মেনে চলেন এবং প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।