
https://www.varendratimes.com/
5128
rajshahi
প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২৫ ১১:১০
তানোর উপজেলায় দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। গত রমজান মাসে সংঘটিত এক ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীর মৃত্যু ও মামলা দায়েরের পর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এবং আহ্বায়ক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ার ফলে এই স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা—উভয় উৎসব পার হয়ে গেলেও বিএনপির তানোর ইউনিটে কোনো উল্লেখযোগ্য সভা-সমাবেশ কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচি চোখে পড়েনি।
দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, স্থবিরতা ও বিভক্তির মূল কারণ হলো তানোরের সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজানের বহিষ্কার। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় এই নেতার অনুপস্থিতিতেই বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। একাধিক নেতার ভাষায়, "তানোর বিএনপি মানেই মিজান।"
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত রমজানে পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিজান। সেখানে অতিথি বরণকে কেন্দ্র করে ইউপি বিএনপির সাবেক সভাপতি মমিনুল হক মমিন ও বর্তমান সভাপতি মজিবুর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এই ঘটনায় মমিনের ভাই বিএনপি কর্মী গানিউল আহত হয়ে মারা যান। পরে মিজানসহ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যদিও মিজান ছিলেন কেবল অতিথি, তবু তাকেও মামলার আসামি করা হয়। এরপর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে মিজান ও মজিবুরকে বহিষ্কার করা হয় জেলা আহ্বায়ক কমিটি থেকে।
এ সিদ্ধান্তে তৃণমূলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকেই একে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল বলে মনে করেন। পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন, "মিজান ছিলেন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের একজন সাহসী নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার মিথ্যা মামলা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজনীতি করেছেন।"
পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুব মোল্লা বলেন, “তানোরের সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার নেতাকর্মীরা একাধিক বৈঠক করে মিজানের বহিষ্কার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই তানোর বিএনপি একত্র ছিল।”
পাঁচন্দর ইউপির সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সহকারী অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন সরকার বলেন, “মিজান তানোর বিএনপির প্রতীক। তিনি ছাড়া ঐক্য সম্ভব নয়।”
চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজাদ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “মিজান হচ্ছেন তানোর বিএনপির বটবৃক্ষ। তাঁকে বহিষ্কার করায় সাংগঠনিকভাবে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছি।”
সাবেক কাউন্সিলর আবু সাঈদ বাবু ও আব্দুল মান্নান বলেন, “অতীতে আন্দোলনের সময় মিজানই দলকে সংগঠিত করেছেন। এখন তাঁকে ছাড়া বিএনপির কাঙ্ক্ষিত গতি ফিরবে না।”