
https://www.varendratimes.com/
5126
rajshahi
প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২৫ ০৩:০৭
রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে সম্ভাব্য অনিয়ম ও প্রকৌশলগত ত্রুটির অভিযোগ উঠেছে। ‘স্থানীয় সরকার কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রকল্প’-এর আওতায় ভোলাবাড়ি সড়কে নির্মাণাধীন একটি আরসিসি ড্রেন ও ফুটপাতের কাজে নকশা লঙ্ঘন ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় পৌর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩ দিনের সময়সীমা দিয়ে ত্রুটি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে।
প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ৪৫ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নে নিয়োজিত রয়েছে মেসার্স শাপলা ট্রেডার্স নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সধারী ঠিকাদার শামীম আহমেদ ও সুমন আলী। স্থানীয়ভাবে পরিচিত এই দুই ঠিকাদার রাজনৈতিকভাবে কৃষকদল ও বিএনপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই নওহাটা পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ আকস্মিকভাবে নির্মাণস্থল পরিদর্শনে গিয়ে একাধিক কারিগরি অনিয়ম চিহ্নিত করে। বিশেষ করে ড্রেনের ভার্টিক্যাল ও বেজ রডের দূরত্ব যেখানে নির্ধারিত ছিল ১৫০ মিলিমিটার, সেখানে তা বাস্তবে ২০০ মিলিমিটার পরিমাপে স্থাপন করা হয়। এতে ড্রেনের স্থায়িত্ব ও কাঠামোগত ভারসাম্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া, খনন কাজের পর বালু দিয়ে যথাযথ সলিং না করা এবং নির্ধারিত লেভেল বজায় না রাখার অভিযোগও উঠে এসেছে। ফলে ভবিষ্যতে ড্রেনেজ ব্যবস্থায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। নির্মাণস্থলের পাশে খনিত মাটি ফেলে রাখায় বর্ষাকালে পথচারীদের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন।
এ বিষয়ে নওহাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, “নকশা অনুযায়ী কাজ না করায় এবং ত্রুটির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে তিন দিনের সময় দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। গুণগত মান নিয়ে কোনো আপস হবে না। প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
চিঠি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঠিকাদার শামীম আহমেদ দাবি করেন, “কাজে কোনো ত্রুটি থাকলে মৌখিকভাবে জানানো উচিত ছিল। সরাসরি চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে আমাকে এক ধরনের অসম্মান করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার পেছনে অন্য উদ্দেশ্যও দেখতে পাচ্ছি।”
এদিকে, প্রকল্প শুরুর পর থেকেই এলাকাবাসী নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে আসছিল। তাদের অভিযোগ, খোলা জায়গায় মাটি ফেলে রাখা, সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাব এবং নির্মাণকাজে অব্যবস্থাপনার কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাস্তার ধারে মাটির স্তূপের কারণে দোকানে ক্রেতাদের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে, যার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়ও।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত আমান আজিজ এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, “সরকারি অর্থে বাস্তবায়িত প্রকল্পে কোনো রকম নয়ছয় বরদাশত করা হবে না। যদি প্রতিষ্ঠানটি নকশা অনুযায়ী যথাযথভাবে কাজ সম্পন্ন না করে, তাহলে তাদের বিল আটকানো হবে এবং প্রয়োজনে কার্যাদেশ বাতিল করে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে।