https://www.varendratimes.com/

5125

rajshahi

চর আষাড়িয়াদহে ৫৪ বছরের ঘাট ইজারা প্রথা বাতিলের পথে

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২৫ ০২:৩৩

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহের বাসিন্দারা নৌকায় পারাপারের সময় দীর্ঘদিন ধরে ঘাট ভাড়া ও নৌকা ভাড়ার নামে বাড়তি টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছিলেন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির দখলদারি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করে আসছিলেন। অবশেষে সেই দাবির ফল হিসেবে ৫৪ বছর পর ঘাট ইজারা প্রথা বাতিলের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে চরবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করে। এ সময় তারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ঘাট ইজারা বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।

সূত্রে জানা গেছে, চর আষাড়িয়াদহ ঘাটটি রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আওতায় ছিল এবং এটি ইজারা দিয়ে পরিচালনা করা হতো। সর্বশেষ দেড় লাখ টাকায় ২৮ দিনের জন্য ঘাটটি স্থানীয়ভাবে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। তবে ইজারাদাররা সরকারের নির্ধারিত ভাড়া মানেননি; তারা মাত্র কয়েক দিন পরিচালনার পরই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শুরু করেন। এর প্রতিবাদে দীর্ঘ আন্দোলনের মুখে প্রশাসন ঘাটের ইজারা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে।

চরবাসীদের জানানো হয়, এই ঘাট ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পথ না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে প্রতিদিনই বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতেন। যেখানে সরকার নির্ধারিত টোল ছিল ৫ টাকা, সেখানে ২০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো। ফলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে, গত তিন মাসে ইজারাদার না থাকায় চরবাসী অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন এবং এই অবস্থা স্থায়ী রাখতে ঘাট ইজারা প্রথা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, “চরবাসীর কষ্ট আমরা অনুধাবন করছি। আমরা চাই তাদের এই ভোগান্তির স্থায়ী সমাধান হোক। ঘাট ইজারা প্রথা সম্পূর্ণ বাতিলের বিষয়ে আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাব। আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছি।”

উল্লেখ্য, এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. জাকিউল ইসলাম, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান, এবং গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ।