https://www.varendratimes.com/

5130

rajshahi

সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় রাজশাহীতে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২৫ ২৩:০৫

রাজশাহীর কীটনাশক বাজারে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে। জেলার ৯৯ শতাংশ দোকানে এখনও পাওয়া যাচ্ছে সরকার-নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। ক্রেতাদের বড় একটি অংশ জানেই না, তারা যেসব পণ্য ব্যবহার করছেন, সেগুলো বিপজ্জনক ও নিষিদ্ধ। বারসিক (বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান)-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারী জানেন না এসব পণ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে। ভয়াবহ ব্যাপার হলো, এ ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করে ৬৮ শতাংশ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব’ শীর্ষক মাঠভিত্তিক সমীক্ষাটি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত পরিচালনা করা হয় এবং এটি উপস্থাপন করা হয় বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে। সোনার দেশ পত্রিকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ এমন কিছু বিপজ্জনক কীটনাশক বাজারে বিক্রি হচ্ছে নতুন নামে ও প্যাকেজিংয়ে। এর মধ্যে রয়েছে:

জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট),ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জি এসআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর নিধনের বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পণ্য শুধু ফসল নয়, বরং মানবদেহের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় মানুষ না বুঝেই এই প্যারাকোয়াট জাতীয় বিষ পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এতে দ্রুত কিডনি অকেজো হয়ে মৃত্যু ঘটে।

এ সমীক্ষা থেকে কৃষিখাতে একটি অগোছালো ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। প্রশ্ন উঠেছে—যেখানে কৃষি বিভাগ কীটনাশক প্রয়োগ নিরুৎসাহিত করছে, সেখানে কীভাবে নিষিদ্ধ পণ্য এত সহজে বাজারজাত হচ্ছে? প্রশিক্ষণ, সচেতনতা এবং বিকল্প চাষ পদ্ধতির ওপর জোর দেয়ার পরও নিষিদ্ধ পণ্যের এমন ব্যবহার নীতিনির্ধারকদের জন্য বড় প্রশ্নবিদ্ধ।

অনেকেই মনে করছেন, একটি সুসংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব পণ্য বাজারে আসছে। এর পেছনে আমদানিকারক, সরবরাহকারী, পাইকার, খুচরা বিক্রেতা এমনকি সংশ্লিষ্ট কিছু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মদদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই দ্রুত তদন্ত করে এসব বিষাক্ত পণ্য বাজেয়াপ্ত ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে।