
https://www.varendratimes.com/
1521
special-report
প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪৪
ঝগড়া করবেন, ধমক দিবেন, কান্নাকাটি করবেন কিংবা প্রয়োজনে থাপ্পরও দিবেন- তবুও আল্লাহর কাছে বিচার দিবেন না। যতক্ষণ নিজে সহ্য করে থাকতে পারবেন, সামলে নিতে পারবেন কিংবা শোধ তুলতে পারবেন- নিজেই মিটিয়ে নিন। তবে প্রতিশোধ গ্রহনের চেয়ে ক্ষমা উত্তম। তবু কারো ভুল ক্ষমা করতে না পারলে, অভিশাপ দিতে হলে কিংবা দীর্ঘশ্বাস বের হলে- তার সর্বনাশ।
সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে আপনার জিত কিংবা হার হলেও হোক কিন্তু আল্লাহর কাছে বিচার দিলে- যার নামে বিচার উঠবে তার অপরাধ পেলে সর্বনাশ। তিনি ন্যায় বিচারে কখনোই কৃপণতা প্রকাশ করেন না। যার যতটুকু অন্যায়-অপরাধ তিনি তাকে ঠিক ততটুকু শাস্তি প্রদান করেন। তবে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে-দ্বিপাক্ষিক সমস্যা ছাড় দিয়ে, মেনে নিয়ে কিংবা ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিজেরাই মিটিয়ে নেওয়া।
এমন যদি হয়- আপনি আল্লাহর কাছে নালিশ দিলেন কিন্তু দোষ আপনার।
এবার আপনিও শাস্তি থেকে রক্ষা পাবেন না। বরং ভুলের শাস্তি এবং মিথ্যার শাস্তি মিলে কঠোর শাস্তি পাবেন। খোদার শাস্তি কত ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটার নমুনা- আফসোস করা! এই যে লোকে বলে, দুর্দিন কেটে আবার সুদিন আসবে। খারাপ সময় চিরদিন থাকে না। কথা সত্য। পাপ কেটে গেলে তারপর সুদিন আসবেই। আপনার নিজের কিংবা আপনার সমর্থিত দলমতের পাপ-পূণ্যেই দুর্দিন-সুদিন আবর্তিত হয়। দিনের নিজস্ব কোন দোষগুণ নাই। সবকিছু আমার-আপনার হাতের কামাই। কখনো কখনো দলের দোষে ব্যক্তির সর্বনাশ হয় কিংবা ব্যক্তির কাজের খেসারত দলকে দিতে হয়।
আপনি আল্লাহকে না বললেও তিনি জানেন, না ডাকলেও তিনি সব শোনেন কিংবা গোপনে থাকলেও তিনি সবকিছু দেখেন। তবে তিনি আপনার ভুলে আপনার অনুতপ্ত হওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। যার হক নষ্ট করেছেন, যারে ঠেকিয়ে রেখেছেন কিংবা যাকে ব্যথা দিয়েছেন- অচিরেই তার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করুণ। দাবি না ছাড়িয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবেন না। যেহেতু আমরা কেউ মৃত্যুর সময় সম্পের্ক নিশ্চিত নই সেহেতু যতদ্রুত সম্ভব অন্যের হক ফিরিয়ে দেওয়া, ক্ষমা চাওয়া কিংবা নত হওয়া জরুরি।
অল্লাহর কাছে অন্যের জন্য দোয়া করুন, নিজের কল্যাণ প্রার্থনা করুন- এই তরিকা সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। কারো নামে নালিশ করা- দেয়ালে পিঠ না ঠেকলে দরখাস্ত নিয়ে হাত তুলবেন না। কেউ আঘাত করে গেছে, কেউ মন ভেঙেছে কিংবা কেউ অহেতুক ব্যথা দিয়েছে- দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করুন। আপনার যেটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটুকুর বিনময়ে পুরস্কৃত হবেন। কারো নামে মামলা করলে, নালিশে চোখের পানি ফেললে- অভিযোগ সত্য হলে তার বিনাশ অনিবার্য। যারা দুঃখ দেয় তারা কাছের মানুষ। কাছের মানুষদের অনুতপ্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।
যদি ক্ষমা করতে পারেন, যদি ভুলে যেতে পারেন তবে আপনি ঠকছেন না। কারো অন্যায়-ভুল মনে ধরে রাখলে তিক্ততা বাড়ে। দেখুন, মানুষের থেকে দূরত্বে থেকে ভালো থাকা যায় না। প্রিয়জনের কাছ থেকে দূরে সরে থাকা ঠিক না। তবে কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করলে সাবধান থাকুন, মেপে চলুন। আল্লাহর ন্যায় আদালত দুনিয়ার বিচারালয়ের মত ত্রুটিযুক্ত নয়। দুনিয়ায় আপনি নালিশদাতা হলে তুলনামুলক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকেন কিন্তু আল্লাহর আদালতে আপনি ক্ষমাকারী হিসেবে হাজির হোন- মর্যাদা পাবেন। আল্লাহর রহম আপনার জীবনে বারাকাহে ভরিয়ে দেবে।