
https://www.varendratimes.com/
2086
rajshahi
প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫২
রাজশাহীর পুঠিয়ার এক সন্তানের জননীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে নাটোরের বনপাড়ায় নিয়ে ভূয়া কাজী দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে ৭ মাস পর যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন চালিয়ে ভাড়াকৃত বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিচারের দাবীতে পথে পথে ঘুরছে সেই ভূক্তভোগী মহিলা।
ভুক্তভোগী জানান, আমার বড় বোন আফরোজা বেগমের দেবর নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈার গাড়িষাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে মামুন বেগ (৪২) এর সাথে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামের তালাকপ্রাপ্ত এক সন্তানের জননী সাথী খাতুনের সাথে পরিচয় হয়।
আত্মীয়তার খাতিরে বাড়ি আসা যাওয়া করতে থাকে। তারপরে মোবাইল ফোনে কথাবার্তায় প্রেমের সর্ম্পক শুরু হয়। এরপর মামুন আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে নিয়ে যায়। বিয়ের ১ মাস পূর্বে সকালে মোটরসাইকেল যোগে মামুন পুঠিয়াতে এসে আমাকে বেড়ানোর নাম করে বেলা ১২ টার দিকে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় ট্রাকের বডি মিস্ত্রি মুহিনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সে সময় মুহিনের বাড়িতে গেষ্ট রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সর্ম্পক করতে চায়।
সে সময় আমি রাজি না হওয়ায় মামুনের কাছে থাকা চাকু দেখিয়ে আমাকে বলে মেরে ফেলবে। তারপর সে নিজেও আত্মহত্যা করবে বলে আমাকে ভয় দেখিয়ে শারীরিক সর্ম্পক করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। তারপর বিকেল ৪ টার দিকে মুহিনের বাড়ি থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেল যোগে ঝলমলিয়া বাজার দিয়ে পীরগাছার রাস্তা হয়ে বারইপাড়া ভাটার সামনে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে যায়। সে সময় আমাকে ভয়ভীতি দেখায় কাউকে কিছু না বলার জন্যে।
এরপর থেকে সেই ভিডিও ছবি দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে শারিরিক সর্ম্পক করতে থাকে এবং মামুন বলে তাকে বিয়ে না করলে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিবে। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে আমাকে বনপাড়ায় মুহিনের বাড়ি নিয়ে গিয়ে ভূয়া কাজী জয়নাল এর নিকট বিবাহ পড়ান এবং ১০ লক্ষ টাকা দেন মোহর রেখে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করায়। সে সময় মুহিন তার বাড়ির পার্শ্বে ব্যাংক কর্মকর্তা হান্নান ভূইয়ার বাড়ির ২য় তলায় একটি ইউনিটে থাকার জন্য ভাড়া নিয়ে দেয়। সেখানে আমরা প্রায় ৪ মাস ঘর সংসার করি।
এরপর মামুন বেগ বাড়ি পরিবর্তন করে আমাকে গুরুদাসপুর থানার কাচিকাটা র্যাব সদস্য কাউসার আলীর বাড়িতে নিচ তলায় একটি ইউনিটে নিয়ে গিয়ে রাখে। সেখানে প্রায় ২ মাস ঘর সংসার করি। এ সময় মামুন আমাকে বিভিন্ন ভাবে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতে থাকে আর বলে তোকে অনেক আগেই তালাক দিয়ে দিয়েছি। তোর সাথে আর সংসার করবো না। এ সময় আমার বড় বোন আফরোজা কে জানালে, সে কাচিকাটা গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে। ঘটনার মুল হোতা ও বিয়ের সাক্ষী মুহিন এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বিয়ের ১ নং সাক্ষী চাঁচকৈড়ের আয়ুব আলী জানান, আমার সামনে মামুন বেগ ও সাথী খাতুন বিয়ে করেছে। কিন্তু কাজী আসল না নকল আমার জানা নাই। মামুন বেগের বড় ভাই কেরামত আলী জানান, শুনেছিলাম বিয়ে করেছে। আবার ছেড়েও দিয়েছে। সেই বিষয়ে আমরা কোন দায়ভার নিতে পারবো না। রেজিষ্ট্রার বিহিন কাজী জয়নাল জানান, ওরা কোথায় কি করেছে সেই টা আমার জানা নাই। তবে আমি বিয়ে পড়াইনি। মামুন বেগ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করেছে।
তার পরের দিনই তাকে আমি তালাক দিয়েছি। নাটোর জেলা রেজিষ্ট্রার কাজী সমিতির সভাপতি মহসিন আলী জানান, জয়নাল কোন রেজিষ্ট্রারকৃত কাজী নয়। সে তো আপনাদের নিকাহর কাগজও দিতে পারবেনা। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।