রাবিতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়া শিক্ষক ও ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কৃত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ও এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক হওয়ার ঘটনায় সাময়িকভাবে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন।

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার গভীর তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রী কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।

এর আগে ২১ মে বিভাগের একাডেমিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে বিভাগীয় কার্যক্রম থেকেও সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত ১১ মে সন্ধ্যায় রাবির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক এমবিএ ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন দুই সাংবাদিক ও দুই শিক্ষার্থী।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক দাবি করেন, ভিডিও প্রকাশ না করার শর্তে দুই সাংবাদিক, এক সাবেক ছাত্রনেতা ও এক শিক্ষার্থী তাঁর কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন। একই দাবি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীও করেন।

অন্যদিকে, সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন সজীব ও সিরাজুল ইসলাম সুমন সংবাদ সম্মেলনে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে অভিযোগ ওঠার পর তাঁদের সাংবাদিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সজীব ‘কালবেলা’ এবং সুমন ‘খবরের কাগজ’-এর প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে তাঁরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) থেকেও অব্যাহতি পান।

এদিকে, হেদায়েত উল্লাহ মতিহার থানায় মামলা দায়ের করে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন চারজনের বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইবিএর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আতাউল্লাহ ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে হেদায়েত উল্লাহ ও সাকিবের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়।

২১ মে বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রীসহ অভিযুক্ত চার শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান। পরদিন সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।